আল-কুরআনের পরিচয় (পাঠ ১)

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ইসলাম শিক্ষা - কুরআন ও হাদিস শিক্ষা | NCTB BOOK
155
Summary

পরিচয়: কুরআন মজিদ সর্বশেষ এবং শ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব, যা মহান আল্লাহর বাণী। এটি মানবজাতির হিদায়াতের জন্য হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর ওপর নাজিল হয়। এতে আল্লাহ তায়ালার পরিচয়, গুণাবলী, ইমান ও ইসলামের বিষয় উল্লেখিত হয়েছে।

অবতরণ: কুরআন মহানবি (স.)-এর উপর ২৩ বছরে পর্যায়ক্রমে নাজিল হয়েছে। প্রথমবার ‘সূরা আল-আলাক’ এর পাঁচটি আয়াত নাজিল হয়।

বৈশিষ্ট্য: এটি ১০৪টি আসমানি কিতাবের মধ্যে সর্বশেষ। কুরআন মানব জীবন ও দীনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান প্রদান করে।

গুরুত্ব: কুরআন জ্ঞানের ভাণ্ডার, যেখানে আল্লাহর গুণাবলী, মানব সৃষ্টির অবস্থা, সৌরজগৎ, নাবীদের ঘটনা এবং আইন ও বিধিবিধান বর্ণিত। এটি সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী। কুরআন পড়া এবং এর জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।

পরিচয়
কুরআন মজিদ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব। এটি মহান আল্লাহর বাণী। মানবজাতির হিদায়াতের জন্য আল্লাহ তায়ালা শেষ নবি হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর উপর এ কিতাব নাজিল করেন। আল্লাহ তায়ালার পরিচয়, তার গুণাবলি, ইমান ও ইসলামের সকল বিষয় এতে বর্ণনা করা হয়েছে। এতে রয়েছে জ্ঞানবিজ্ঞানের সারকথা। কোন পথে চললে মানুষ সফলতা লাভ করবে তাও এতে বলে দেওয়া হয়েছে।
এটি মহান আল্লাহর পবিত্র বাণী। আজ পর্যন্ত এটি অবিকৃত রয়েছে। কেউ এর একটি নুকতা, অক্ষর, শব্দ বা হরকতও পরিবর্তন করতে পারেনি। আর ভবিষ্যতেও পারবে না। কেননা, এর সংরক্ষক স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা।

কুরআন মজিদ অবতরণ
আল-কুরআন সর্বশেষ নবি ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে। এটি 'লাওহি মাহফুয' বা সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স.) আরব দেশের মক্কা নগরে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানকার লোকজন ছিল মূর্তিপূজক। তাদের মধ্যে প্রায়ই মারামারি, কাটাকাটি ও কলহ-বিবাদ লেগেই থাকত। মহানবি (স.) এসব পছন্দ করতেন না। তিনি ভাবতেন যে, সকল মানুষের একজনই সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন। তাঁর দেখানো পথে চললে সমাজে কোনোরূপ অশান্তি থাকবে না। এজন্য তিনি হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। চল্লিশ বছর বয়সে তিনি নবুয়তপ্রাপ্ত হন। আল্লাহ তায়ালা জিবরাইল (আ.) ফেরেশতার মাধ্যমে তাঁর নিকট আল-কুরআন নাজিল করেন। এ সময় আল-কুরআনের সূরা আল-আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত নাজিল হয়। পরবর্তীকালে প্রয়োজন অনুসারে কুরআনের নানা আয়াত নাজিল করা হয়। এভাবে মহানবি (স.)-এর উপর ২৩ বছরে পবিত্র কুরআন সম্পূর্ণরূপে নাজিল হয়।
আল-কুরআনের বৈশিষ্ট্য
আল-কুরআন সর্বশেষ আসমানি কিতাব। আল্লাহ তায়ালা সর্বমোট ১০৪ (একশত চার) খানা আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন। এগুলোর মধ্যে ১০০ (একশত) খানা ছোট কিতাব। এগুলোকে বলা হয় সহিফা। আর ৪ (চার) খানা বড়ো। এগুলো হলো-তাওরাত, যাবুর, ইনজিল ও কুরআন। আল-কুরআন হলো সর্বশেষ আসমানি গ্রন্থ। এরপর আর কোনো কিতাব আসবে না।
কুরআন মজিদ সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এতে দীনের যাবতীয় বিষয় বর্ণনা করা হয়েছে। মানুষের জীবনে যেসব সমস্যার উদ্ভব হয়ে থাকে তার সমাধানের ব্যাপারে এতে নির্দেশনা রয়েছে। পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবসমূহের মূল শিক্ষাও এতে বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং আল-কুরআন সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব।
আল-কুরআন আল্লাহ তায়ালার বাণী। এর ভাব ও ভাষা অনন্য ও অপূর্ব। এটি মহানবি (স.)-এর সবচেয়ে বড়ো মু'জিযা। কেউই এর ক্ষুদ্রতম সূরার সমতুল্য কিছু রচনা করতেও সক্ষম হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না।

আল-কুরআনের গুরুত্ব
আল-কুরআন জ্ঞানসমূহের ভাণ্ডার। এতে রয়েছে আল্লাহ তায়ালার পরিচয়, তাঁর গুণাবলির বর্ণনা, তাঁর ক্ষমতা ও নিয়ামতসমূহের বর্ণনা। আল-কুরআনে মানব সৃষ্টির অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। সৌরজগৎ, আসমান জমিন, নক্ষত্ররাজি, পাহাড়, পর্বত সবকিছু সম্পর্কেই এতে উল্লেখ করা হয়েছে। পূর্ববর্তী জাতিসমূহের ঘটনা, নবি-রাসুলগণের বিবরণ, পুণ্যবান ও পাপীদের অবস্থা ইত্যাদিও আল-কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে।
আল-কুরআনে নানারকম বিধিবিধান ও আইনকানুন বর্ণিত হয়েছে। এটি সত্য ও মিথ্যার পার্থক্যকারী। কীভাবে চললে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি লাভ করবে এর দিকনির্দেশনাও আল-কুরআনে দেওয়া আছে। আল-কুরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব। এতে দীনের সকল কিছুর জ্ঞান সন্নিবেশিত আছে। আল-কুরআনের জ্ঞান অর্জন করা আমাদের সকলের একান্ত কর্তব্য। সুতরাং আমরা আল-কুরআন পড়ব এবং এর নানাবিধ জ্ঞান অর্জন করব।

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...